প্রকাশিত: Tue, Jan 31, 2023 3:53 PM
আপডেট: Mon, Jun 23, 2025 11:41 PM

শিক্ষাবিদ আবুল কাসেম ফজলুল হক

রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান ছিলো অস্বাভাবিক, সে কারণে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন বাঙালির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিলো

ভূঁইয়া আশিক রহমান : শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেছেন, আমরা মাতৃভাষা বাংলা রক্ষা করেছি আন্দোলন করে। কিন্তু রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নটা তখন এতোটা গুরুত্বপূর্ণ ছিলো কেন? কারণ পাকিস্তান ছিলো একটি অস্বাভাবিক রাষ্ট্র, ১৯৪৭ সালে যে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হয়। দুই অংশের মাঝে যে একটি ব্যবধান ছিলো, এভাবে একটি স্বাভাবিক রাষ্ট্র হয় না। এই বিষয়টা তখন বাংলা ভাষার যারা প্রতিনিধি ছিলেন তাদের অধিকাংশই উপলব্ধি করতেন এবং পাকিস্তান রাষ্ট্র কাঠামোতে রাষ্ট্রভাষা কী হবেÑ এটা নিয়ে কলকাতায় ব্রিটিশ আমলের শেষ পর্যায় থেকে আলোচনা আরম্ভ হয়। 

তিনি বলেন, বাংলা ভাষা নিয়ে এর আগেও অনেক বিতর্ক হয়েছে। মুসলমানদের মধ্যে যারা নেতৃত্বে ছিলেন, তারা ছিলেন উর্দুভাষী। যেমন খাজা নাজিমুদ্দিন, সলিমুল্লাহ। তারা মুসলমান সমাজের নেতৃত্বে ছিলেন, তারাই উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাইতেন। তবে জন্মসূত্রে বাঙালিরা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষা চাইতেন। এ নিয়ে তুমুল বিরোধ ছিলো। বাঙালিদের যুক্তি ছিলো, পাকিস্তান একটি অস্বাভাবিক রাষ্ট্র, উর্দু রাষ্ট্রভাষা হলে বাঙালিরা উন্নতি করতে পারবে না। এই ধারণা ধীরে ধীরে প্রবল হয়ে উঠেছিলো। একটা পর্যায়ে সারাদেশে সব মানুষের মাঝে এই মনোভাব দেখা যায়। বাঙালি জাতীয়তাবাদী চিন্তা-চেতনা বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা আন্দোলনের সময় প্রবল হয়ে ওঠে।

এই শিক্ষাবিদ বলেন, বাংলা যদি রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে না থাকে, তাহলে বাঙালিরা পিছিয়ে পড়বে। পাকিস্তানের প্রশাসন ব্যবস্থায় কাজের সুযোগ কমে যাবে। জাতীয়তাবাদী চেতনা বাংলা ভাষার সঙ্গে জড়িয়ে দিয়েছিলো। এই যে একুশে ফেব্রুয়ারি প্রতি বছর উদযাপন করা হয়, এর ভেতর দিয়ে বাঙালির ব্যবধান অনেক বেড়েছে। আমাদের এই ধারার নেতৃত্বে ছিলেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা ভাসানী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানদের মাধ্যমে বাংলা ভাষার উন্নতি ও বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা নিয়ে জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে গিয়েছে। পরবর্তী জেনারেশন সেগুলো ঠিক সেভাবে উপলব্ধি করেনি। সম্পাদনা: থালিদ আহমেদ